জাবি প্রতিনিধি: শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের নির্দেশেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তা করেন ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাগর সিদ্দিকী বলে জানা গেছে। এ সময় জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও একই হলের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ পরাণ মুঠোফোনে তাদের দিকনির্দেশনা দেন।
সাগর সিদ্দিকীকে আরও সহয়তা করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামান, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন সাগর। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা শাহ পরাণের নাম স্বীকার করলেও অলৌকিকভাবে সব জায়গা থেকে তার নাম মুছে যায়। তার নির্দেশে এবং প্রভোস্টের সহায়তায় হলের তালা ভাঙ্গার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তাবে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতার তোপে হল প্রশাসন শাহ পরাণকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে রাজি হলেও ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন আশ্বাস দেন যে শাহ পরাণ হলেই আছেন এবং দশ মিনিটের কথা বলে তাকে নিয়ে আসতে যান। পরে কালক্ষেপন হলে উপস্থিত হল প্রশাসনের লোকজন শাহ পরাণকে তার রুমে খোঁজখুজি করে না পেয়ে পুরো হল তল্লাশি চালান। পরে জানা যায় দেলোয়ার হোসেন শাহ পরাণকে হল থেকে পালাতে সাহায্য করেন। কিন্তু অদৃশ্য ছায়ায় পরাণ এখনও নিরুদ্দেশ। এর আগে ২০২১ সালের ৮ জুলাই এক ছাত্রীকে পোশাক ও শরীর সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্য এবং উত্ত্যক্তের ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ভুক্তভোগী এক ছাত্রী।
তারা সকলেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাবি শাখার সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী এবং তার নির্দেশেই আসামীকে পালাতে সাহায্য করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শনিবার( ৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত বারোটার দিকে মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মীর মশাররফ হোসেন হলের রান্নাঘরের তালা ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। তাকে তালা ভেঙে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসান, ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী সাগর, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন সাগরকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তারা অভিযোগ স্বীকার করে নেয়।
পরে রোববার আটটার দিকে মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান সাভার মডেল থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ আবাসিক হলের ৩১৭ নং কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে কৌশলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও মামুনুর রশীদ মামুন।
এমটি/ এএটি