স্টাফ রিপোর্টার: সামগ্রিক ব্যবসায়িক ব্যয় বৃদ্ধি এবং রপ্তানি হ্রাসের কারণে পোশাক খাত এখন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। পোশাক খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থাকে ক্রেতাদের সঙ্গে বসে শিল্পের বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে হবে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিজিএমইএ নির্বাচনের আগে মিট দ্য প্রেসে বক্তৃতাকালে ফোরাম প্যানেলের নেতা ফয়সাল সামাদ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পণ্যের ন্যায্য ও নৈতিক মূল্য নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে সঠিকভাবে আলোচনা করতে পারেনি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বর্তমান বোর্ড। বর্তমান বোর্ড উৎসে করের সমস্যা সমাধান করতেও ব্যর্থ হয়েছে যা ব্যবসার মন্দার মধ্যেও অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয় বাড়িয়েছে।
ফয়সাল সামাদ বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আমাদের ফোরাম প্যানেল নির্বাচিত হলে, আমাদের বোর্ড সমস্যাগুলোকে ফোকাস করবে, সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য পোশাক খাতের উপর সঠিকভাবে গবেষণা করবে। এটি আমাদের শিল্প চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে, সেক্টরকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করবে।
ফোরামের প্যানেল নেতা আরও বলেন, তারা ২১ ডিসেম্বর ৬৬টি পোশাক প্রস্তুতকারকের উপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। তাদের মধ্যে ৭৯.১ শতাংশ রপ্তানিকারক বলেছেন ক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়ায়নি। এমনকি, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে গড় ৪৭.৮৫ শতাংশ শুল্ক ও বন্ড সংক্রান্ত ব্যয় বেড়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জরিপ অংশগ্রহণকারীদের ২৭.৫ শতাংশ উৎপাদন ক্ষমতা ২০২৩ সালে খালি ছিল। এমনকি, ৬২.২১ শতাংশ কারখানার ক্ষমতা বুক করা হয়েছিল, এবং ৩৭.৭৯ শতাংশ পরবর্তী চার মাসের জন্য খালি ছিল। আর রপ্তানিকারকরা বলছেন, গত এক বছরে গড় দাম কমেছে ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।
নির্বাচনে নতুন ভোটার নিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে বেশি কিছু ভোটার সংযুক্ত হয়েছে। ওয়েবসাইটটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে ২,৩১৫ জন ভোটারের মধ্যে ৪২৯ জনের সঠিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) এবং অন্যান্য ট্যাক্স সংক্রান্ত নথি নেই। যার জন্য আমি একটি অভিযোগ করেছি। পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে প্রথমে বিজিএমইএকে কমপ্লায়েন্স হতে হবে বলে জানান তিনি।
মোটেক্স ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মাসুদ কবির জানান, তিনি জার্মান ও ডেনমার্কের মতো ইউরোপের মত বেশ কয়েকটি দেশে পোশাক রপ্তানি করেন। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে তাদের ব্যবসা এখন চাপের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে ন্যায্য দাম পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি ঘোষণা করার পর আমরা কিছু ক্রেতাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি, কিন্তু অনেক ক্রেতা আমাদের পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে অনুরোধ করার পরেও এখনও সাড়া দেয়নি।
মাসুদ কবির আরও বলেন, ক্রেতারা দাম না বাড়ালে পোশাক শিল্প মারাত্মক সমস্যায় পড়বে। আমাদের পণ্যের গুণমানগত মান প্রতিযোগীদের তুলনায় খারাপ নয়, তবে আমরা ভারত এবং ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগীদের তুলনায় কম দাম পাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্যাশন পাওয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান এবং সফটেক্স সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রেজওয়ান সেলিম।
এমটি/ এএটি