রাজিব হোসেন রাজন: তৈরি পোশাক শিল্পের চাকরি ছেড়ে এখন নিজেই হয়েছেন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। ২০২৩ সালে ছেড়েছেন গার্মেন্টসের চাকরি,পরে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে গড়ে তোলেন মালচিং পদ্ধতিতে কৃষি অ্যাগ্রো ফার্ম। তাঁর খামারের নাম ‘তাকওয়া কৃষি অ্যাগ্রো ফার্ম’। আব্দুল কাদেরের সমন্বিত কৃষি খামার এখন ৬ জন শ্রমিক চাকরি করেছেন। তার এই কৃষি খামার এখন এলাকার বেকার যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
আব্দুল কাদের দীর্ঘদিন পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতেন, সেখানে একটি পোশাক শিল্পের কর্মচারী ছিলেন। সে ছোটকাল থেকে’ই স্বপ্ন দেখতো, নিজে কিছু একটা করবে। সেই স্বপ্ন থেকে ২০২৩ সালে চাকরি ছেড়ে ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলা ডগ্রি এলাকায় চলে আসেন। গ্রামে আসার পর’ই তিনি বেকার হয়ে পড়েন। পরে তিনি নুসার সম্বনিত কৃষি ইউনিটের সহযোগিতায় ৩ একর জমি লিজ নিয়ে পিকেএসএফ এর অর্থায়নে নুসার সহযোগিতায় গড়ে তোলেন আধুনিক মালচিং পদ্ধতি কৃষি অ্যাগ্রো ফার্ম। সেখানে তিনি মালচিং পদ্ধতিতে টমোটো, বেগুন, শসার চাষ করছেন। মাত্র দুই মাসে’ই এসেছে ফলন। এ সবজি চাষে তার প্রায় ৩ লাখ টাকার খরচ হয়েছে, এ অল্প সময়ে তিনি প্রায় চার লাখ টাকা লাভের আশা করছেন ।
আব্দুল কাদের জানান, ঢাকায় থাকা অবস্থায় ইউটিউবে দেশের বিভিন্ন স্থানের সফল খামারিদের গল্প দেখে আগ্রহ হন তিন। সুযোগ পেলেই সেইসব খামার পরিদর্শনে যেতেন। এক সময় সাহস করে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে স্বজনদের নিজের স্বপ্নের কথা জানান। শুরুতে বেশিরভাগ আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী নিরুৎসাহিত করলেও একপ্রকার স্রোতের বিপরীতে সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলার কাজে হাত দেন। পরিবারের কাছে যখন কোন সহযোগিতা না পান তখন নুসার সম্বনিত কৃষি ইউনিটের সহযোগিতায় তার সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ৩৫ বছরের এই উদ্যোক্তা। তিনি এখন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তাঁর আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ দেখে অনেকেই এখন মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে আগ্রহ দেখিয়েছে।
আব্দুল কাদেরের কৃষি ফার্মে কাজ করা শ্রমিক রবিউল ইসলাম জানান, তারা এ ফার্মে কাজ করে, তাদের সংসার চালাচ্ছেন। তারাও এখন এখানে কাজ করে ভাল আছে।
স্থানীয়রা আব্দুল কাদেরের কৃষি ফার্ম ভিজিট করতে এসে জানান, মালচিং পদ্ধতিতে ফসল ভাল হচ্ছে। সাধারন ফসল ফালানোর চেয়ে এভাবে ফসলের ফলন ভাল হচ্ছে। তার এই সফলতা দেখে অনেকে আগামীতে তার মত সবজি চাষ করতে চায়।
নুসার সমন্বিত কৃষি ইউনিটের ফোকাল পার্সন কৃষিবিদ মো. শওকত হোসেন জানান, আব্দুল কাদের গার্মেন্টস এর চাকরি ছেড়ে গ্রামে এসে বেকার হয়ে পরে। পরে আমাদের সহযোগিতায় চাইলে, আমরা তাকে মালচিং পদ্ধতিতে কৃষি ফসল করতে পরামর্শ দেই। এ পদ্ধতিতে ফসলের ফলন বেশি হয়। আগাছা কম হয়। তাই অল্প খরচে অধিক উৎপাদন হয়। আমাদের পরামর্শে ও সহযোগিতায় তিনি কৃষি ফার্ম করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। আমরা আগামীতে ও তাকে সফল উদ্যোক্তা হতে সহযোগিতা করবো।
এমটি/ এআর