ইবি প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে এবং শিক্ষামন্ত্রী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ নিরবিচ্ছিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এমতাবস্থায় উপাচার্যের অন্যায় প্রতিহিংসা পরায়ণ কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি করছে বলে জানান প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম।
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নিয়োগ বোর্ডে অসদাচারণের অভিযোগে এক বিভাগীয় সভাপতির পদ অবনমন, নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির বিষয়ে শিক্ষক সমিতি ও একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞাসহ উপাচার্যের নিয়োগ বানিজ্যের অডিও ফাঁসের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১২টায় অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এ সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত দুই বছর ধরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কন্ঠ সদৃশ দুর্নীতির বিভিন্ন অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। এমন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে শিক্ষক সমাজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তাই এবিষয়ে সংগঠন থেকে উপাচার্যকে তার অবস্থান পরিষ্কার করার অনুরোধ করলেও তিনি কিছুই জানাননি। পরে তারা এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তদন্ত শুরু করেন ও তা চলমান।
এছাড়াও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে উপাচার্যের স্পর্শকাতর অডিও প্রকাশ হয়। এতে এক প্রার্থী নিয়োগের অস্বচ্ছতার বিষয়ে দূর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন ও তদন্ত চলমান। এর পরই উপাচার্যের নির্দেশে উক্ত বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। এবিষয়ে ড. বখতিয়ার হাসান উচ্চ আদালতে গেলে আদালত উক্ত সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। নিয়োগের বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন ও দুদকের তদন্ত চলাকালীন সময়েই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী তার পদ অবনমন করা হয়।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও একাডেমিক কাউন্সিল ১ম বর্ষে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু উপাচার্য সে সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একনায়কতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, সহ-সভাপতি ড. আনিছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়শ্রী সেন, কোষাধ্যক্ষ রবিউল ইসলামসহ কার্যনির্বাহী সদস্যরা। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির সাংবাদিকবৃন্দ। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন শাপলা ফোরামের শিক্ষক নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, নিয়োগ বোর্ডে মতের অমিলের কারণে যে প্রক্রিয়ায় পদ অবনমন করা হয়েছে এটা নিয়মতান্ত্রিক ও গ্রহনযোগ্য নয়। নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে মতভিন্নতা থাকতেই পারে। আমরা এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।
এমটি/ এএটি